শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
নারায়ণগঞ্জে আরেক ভয়ঙ্কর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জে আরেক ভয়ঙ্কর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার

স্বদেশ ডেস্ক:

নারায়ণগঞ্জে আরেক ভয়ঙ্কর মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ধরা পড়েছেন র‌্যাবের জালে। নিজের মাদ্রাসার চার আবাসিক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে মুফতি মোস্তাফিজুর রহমান জসিম নামের ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার দুপুরে ফতুল্লার ভূঁইঘর এলাকার আল আরাফা রাইস মিল সংলগ্ন দারুল হুদা আল ইসলাম মহিলা মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জসিম ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ। ছয় বছর ধরে ওই এলাকার প্রবাসী আলাউদ্দিন মিয়ার বাড়ির নিচতলা ও দোতলা ভাড়া নিয়ে তিনি মাদ্রাসাটি পরিচালনা করে আসছিলেন।

স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে জসিম মাদ্রাসারই একটি কক্ষে বসবাস করেন। তিনি নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাওয়ালীকোন এলাকার মো. ওয়াজেদ আলীর ছেলে।

এর আগে ছাত্রীদের ধর্ষণের অভিযোগে গত ২৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাইস্কুলের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম এবং গত ৪ জুলাই ফতুল্লার মাহমুদনগর এলাকায় বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল আমিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

জানা যায়, জসিমের ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসার সাবেক দুই ছাত্রী র‌্যাব ১১-এর কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে ব্যাপক তদন্ত শুরু হয়। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে গতকাল দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব ১১-এর উপাধিনায়ক মেজর নাজমুস সাকিব জানান, জসিমের লালসা থেকে রেহাই পায়নি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী তার আপন ভাতিজিও। এ পর্যন্ত তার লালসার শিকার ৪ ছাত্রী সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জসিমের লালসার শিকার যারা হয়েছে, তারা মাদ্রাসার তৃতীয় থেকে আলিম শ্রেণির আবাসিক শিক্ষার্থী।

ঘটনার শিকার দুই শিক্ষার্থী গতকাল গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়, অধ্যক্ষ জসিমের স্ত্রীর কাছে ঘটনা জানিয়েও তারা প্রতিকার পায়নি। উল্টো এ বিষয়ে তাদের চুপ থাকতে এবং কাউকে না জানাতে বলেন তিনি। এ থেকে তাদের অনুমান, জসিমের অপকর্মে তার স্ত্রীর মৌন সমর্থন ছিল।

ওই মাদ্রাসার শিক্ষক জুবায়ের আলম বলেন, মাদ্রাসায় মোট ৯৫ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জন আবাসিক। মাদ্রাসায় মোট ১৭ শিক্ষকের মধ্যে ১১ জন নারী এবং জসিমসহ ৬ জন পুরুষ শিক্ষক রয়েছেন।

ঘটনার শিকার দুই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর বরাত দিয়ে র‌্যাব ১১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন বলেন, গত ২৪ জুলাই ঘটনার শিকার এক ছাত্রী ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ জসিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাবের একটি দল গোপনে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পায়। র‌্যাবের তদন্ত দল আরও জানতে পারে, অতীতে জসিমের বিরুদ্ধে এ ধরনের আরও অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু স্থানীয় একটি গ্রুপ ওই সময় আর্থিক সুবিধা নিয়ে জসিমকে রক্ষা করে।

তিনি আরও জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাইস্কুলের শিক্ষক আরিফুল ইসলাম এবং ফতুল্লার মাহমুদনগর এলাকায় বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল আমিন ছাত্রীদের ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলে সেই সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার হয়। তা দেখেই জসিমের ধর্ষণের শিকার শিক্ষার্থীরা সাহস করে র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করে।

ঘটনার শিকার দুই শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের জানায়, গত ৩ মাসে জসিম তাদের সঙ্গে এসব ঘটনা ঘটান। এর আগেও তিনি এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। জসিম মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্র্থকে তিনবার এবং আলিম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে একবার ধর্ষণ করেন বলে র‌্যাব জানতে পেরেছে।

ঘটনার শিকার আলিম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, জসিম মাদ্রাসার ছোট মেয়েদের দিয়ে তার অফিস কক্ষে টার্গেট করা ছাত্রীদের ডেকে নিতেন। এর পর টুকটাক কাজ করার কথা বলে কৌশলে রুমের দরজা আটকে দিতেন এবং পেছন থেকে জড়িয়ে ধরতেন। এর পর মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করতেন। ধর্ষণ শেষে এসব ঘটনা কাউকে না জানাতে শাসিয়ে ছেড়ে দিতেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877